Header Ads

Header ADS

বিশ্বকাপ ফুটবলের মাস্কট

 

বিশ্বকাপ ফুটবলের একটি আকর্ষণ হলো ’মাস্কট’। প্রতিটি বিশ্বকাপেই কোন না কোন মাসকট দর্শকদের কাছে বিশ্বকাপের মূল স্লোগানটি পৌছে দেয়। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ শুরু হলেও প্রথম বিশ্বকাপ থেকেই মাস্কটের প্রচলন ছিল না। মাস্কটের প্রচলন শুরু হয় ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপের নবম আসর থেকে।

মাস্কটে মূলত আয়োজক দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। সেখানে সে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতির মিশেলে এমন এক প্রতিকৃতি তৈরি হয় যা বিশ্বকাপে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে।

১৯৬৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ টি মাসকট এসেছে ভিন্ন ভিন্ন থিম নিয়ে। আসুন মাস্কটগুলি সম্পর্কে জেনে নিই।

সাল

স্বাগতিক দেশ

মাস্কটের নাম

মাস্কট

বিবরণ

১৯৬৬

ইংল্যান্ড

ওয়ার্ল্ড কাপ উইলি


 

এই মাস্কটের ডিজাইনার ছিলেন ফ্রিল্যান্স শিশুদের বই অঙ্কনকারি রেজ হুওয়। ইংল্যান্ডের বহুল পরিচিত আইকন হচ্ছে সিংহ। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে গেলে তাঁরা সবসময়ই সিংহ ব্যবহার করার চেষ্টা করে। এটিতে ছিল ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা জার্সি পরিহিত একটি সিংহ, যুক্তরাজ্যোর রূপক প্রতিক যার গায়ে লিখা ছিল “বিশ্বকাপ”।

১৯৭০

মেক্সিকো

জুয়ানিতো

 


এটি হলো মেক্সিকোর ঐতিহ্যবাহী সবুজ জামা পরিহিত বালক যার মাথায় মেক্সিকান সোমব্রিরো নামক টুপি ছিল যা মেক্সিকোতে বহুল প্রচলিত। তাছাড়া এটি মেক্সিকো জাতীয় ফুটবল দলের পোষাকের অংশবিশেষও। বালকটির নামকরণ করা হয় জুয়ান যা স্প্যানিশ ভাষায় বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জুয়ানিতোই হচ্ছে বিশ্বকাপের প্রথম রঙিন মাস্কট।

১৯৭৪

পশ্চিম জার্মানি

টিপ এবং ট্যাপ

 


এই বিশ্বকাপের মাস্কটে নতুনত্ব দেখা যায়। এই মাস্কটে একসাথে দুজন বালককে দেখা যায়। দুজনেই জার্মানি জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি পরিধান করেছে। এতে একজনের জার্সিতে লিখা ছিল ডব্লিউএম বা ওয়েলমিস্টারচ্যাফ্ট (অর্থ বিশ্বকাপ) এবং অন্য বালকের জার্সিতে লিখা ছিল ৭৪। ৭৪ দ্বারা বুঝানো হয়েছে ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ। এই বালকদুজনের একজনের নাম টিপ ও অপরজন ট্যাপ।

১৯৭৮

আর্জেন্টিনা

গাওচিটো

আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি ও ক্যাপ পরিহিত এক বালক ছিল ১৯৭৮ বিশ্বকাপের মা্‌স্কট। ক্যাপে লিখা ছিল ৭৮। এছাড়া গলায়ি হলুদ রঙের একটি রুমাল পরিধান করা ছিল। ডান হাতে ছিল আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী চাবুক ‘হুইপ’, পায়ে ছিল একটি ফুটবল।

১৯৮২

স্পেন

নারানজিটো

 

স্পেনের বহুল প্রচলিত ফল হচ্ছে কমলা। এই মাস্কটের গায়ে ছিল স্পেন জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি। স্পেনিশ ভাষায় নারঞ্জা শব্দটি অরেঞ্জ থেকে এসেছে এবং ক্ষুদ্রতম অংশ –ইটো বিভক্তি যুক্ত হয়ে নারানজিটো শব্দটি তৈরি হয়েছে।

১৯৮৬

মেক্সিকো

পিকু

 

মেক্সিকো বিশ্বকাপের মাস্কট ‍পিকু দেখতে বেশ মজাদার ছিল। এটি ছিল মেক্সিকোর রান্নার অন্যতম উপকরণ একটি জালাপিনো মরিচ। এটি সোমব্রিরো টুপি পরিহিত অবস্থায় রয়েছে। ঝাল মরিচ এবং আচারে ব্যবহৃত স্পেনিশ পিক্যানটে নাম থেকে পিকু এষেছে।

১৯৯০

ইতালি

সিয়াও

 

ফুটবল মাথায় নিয়ে এবং ইতালির পতাকায় ত্রিভুজাকৃতির শরীরে রেখা সহযোগে অঙ্কিত খেলোয়াড়ের অবয়ব দেওয়া হয় এই মাস্কটে। এর মূল আকর্ষণ ছিল মাথা হিসাবে ব্যবহৃত একটি ফুটবল। সিয়াও ইতালি ভাষায় ব্যবহৃত এক ধরনের বিশেষ সম্ভাষণ।

১৯৯৪

যুক্তরাষ্ট্র

স্ট্রাইকার, দি ওয়ার্ল্ড কাপ পাপ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্রই পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে মাস্কট হিসাবে ব্যবহার করা হয় এই কুকুর। লাল, সাদা ও নীল রঙের জার্সি পরিহিত এ মা্‌স্কটে লিখা ছিল ’ইউএস ৯৪’।

১৯৯৮

ফ্রান্স

ফুটিক্স

ফ্রান্সের জাতীয় প্রতিক হচ্ছে রুস্টার। এর আদলেই তৈরি করা হয় মাস্কটটি। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে রঙিন মা্‌স্কট হলো এটি। পুরো শরীরই নীল রঙে আবৃত। ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের শার্ট পরিহিত এবং এর হাতে রয়েছে ফুটবল।এ মাস্কটের প্রস্তাবিত অন্যান্য নামগুলি ছিল রাফি, হৌপি এবং গালিক।

২০০২

দক্ষিণ কোরিয়া/জাপান

অ্যাঁতোক্যাজ  নিক (দ্য স্ফেরিক্স)

 

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যৌথভাবে আয়োজিত এই বিশ্বকাপের মাস্কট দেখতে অদ্ভুত ধরনের ছিল। কম্পিউটার গ্রাফিক্সে ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীর মতো আকৃতি নিয়ে তৈরি কল্পিত ফুটবল দলের সদস্যআতমোবল”।আতো” হচ্ছে কোচ এবংক্যাজ” নিক” হচ্ছে খেলোয়াড়। এই বিশ্বকাপের মাস্কটটি এ যাবতকালের সবচেয়ে নিম্নমানের ও সমালোচিত মাস্কট হিসাবে বিবেচিত হয়। জাপান ও কোরিয়ার নাগরিকদের ভোটে এই মাস্কটটি নির্বাচিত হয়।

২০০৬

জার্মানি

ষষ্ঠ গোলিও
সাইডকিকপিলে

 

জার্মান বিশ্বকাপের এই মাস্কটটি ফিফার অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে প্রদত্ত ভোটে শেষ পাঁচটি বিশ্বকাপের মধ্যে সেরা মাস্কট নির্বাচিত হয়েছে। মাস্কটটি ছিল জার্মান জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে সিংহ। এর নাম ছিল ”ষষ্ঠ গোলিও”। এর জার্সি নম্বর লিখা আছে ০৬। আর ফুটবলের মধ্যে চোখ বাসানোটির নাম ”পিলে”। এরা পরস্পরের সাথে কথা বলতো।

২০১০

দক্ষিণ আফ্রিকা

জাকুমি

 

দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের মাস্কটের নাম ছিল জাকুমি। এই নামের ‘জা’ (ZA) হলো দক্ষিণ আফ্রিকার  আইএসও ৩১৬৬-১ আলফা-২ কোড, আর ‘কুমি’ দ্বারা আফ্রিকার অনেক আঞ্চলিক ভাষায় দশ সংখ্যাকে বোঝায়। এর সবুজ ও হলুদ রঙ দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ফুটবল দলের জার্সিকে প্রতিনিধিত্ব করে।

২০১৪

ব্রাজিল

ফুলেকো

 

ব্রাজিল বিম্বকাপের মা্‌স্কট বাচ্চাদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এটি আসলে ব্রাজিলের স্থানীয় বিপন্ন প্রজাতির আর্মাডিলো গোত্রের একটি প্রাণী। এটি ”ফুটেবল” (ফুটবল) ও ”ইকোলজিয়া” (পরিবেশ) শব্দ দুটির যুক্ত শব্দ। ১৭ লাখের উপর ফুটবল দর্শকের ভোটে আমিজুবি ও যুযেকাকে হারিয়ে এর নাম নামকরণ করা হয় ”ফুলেকো”। এর পরনে ছিল সাদা টিশার্ট আর বুকে লিখা আছে “ব্রাজিল ২০১৪”।

২০১৮

রাশিয়া

জাবিভাকা

 

রাশিয়ান ভাষায় জাবিভাকা শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘যিনি গোল করেন’ (দ্য গোলস্কোরার)। মাস্কটটি বাদামী সাদা উলের টি-শার্ট এবং লাল রঙের হাফপ্যান্ট পরিহিত একটি অ্যানথ্রোপোমোরফিক নেকড়ে প্রতিনিধিত্ব করছে, এর টি-শার্টে লেখা রয়েছে "RUSSIA 2018" এবং চোখে রয়েছে কমলা রঙের খেলাধুলার চশমা। ফিফার ওয়েব সাইটে এ মাস্কটটিকে আকর্ষণীয়, আত্মবিশ্বাসী ও সামাজিক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ মাসকটের মাধ্যমে ক্ষুদ্র এক ফুটবলারকে তুলে ধরা হয়েছে যে কিনা একজন তারকা ফুটবলার হয়ে উঠতে চেষ্টা করে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.