Header Ads

Header ADS

বিশ্বকাপ ফুটবলে যা কিছু প্রথম - প্রথম পর্ব



১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসাবে কাতারে ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ পর্যন্ত যা কিছু প্রথমবারের মতো ঘটেছে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকাঃ

১৯৩০ উরুগুয়ে

§     বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচ একসাথে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। একটি ম্যাচে ফ্রান্স মেক্সিকোকে ৪-১ গোলেএবং অপর ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র বেলজিয়ামকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে। উভয় ম্যাচ ১৯৩০ সালের ১৩ জুলাই উরুগুয়ের মন্টেভিডিওতে অনুষ্ঠিত হয়।

§  ▶  বিশ্বকাপে প্রথম গোল করা খেলোয়াড় হলেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ট। তিনি ১৯৩০-এর প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ১৩ জুলাই মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচের ১৯তম মিনিটে গোল করেন।

§   ▶ ১৯৩০ সালের ১৪জুলাই রোমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পেরুর খেলোয়াড়কে প্রথম ম্যাচ থেকে বহিস্কৃত করা হয়। ফিফার তথ্যমতে খেলোয়াড়টি ছিলেন রক্ষণভাগের প্লাসিডো গালিন্দো, তবে অন্যান্যসূত্রের মতে তিনি ছিলেন মধ্যমাঠের মারিও দেলাসক্যাসাস।

§   ▶ বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম পেনাল্টি কিকটি নিয়েছিলেন চিলির কার্লোস ভিদাল ফ্রান্সের বিপক্ষে ১৯ জুলাই ১৯৩০ সালে খেলার ৩৫তম মিনিটে। শটটি সেভ করেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক অ্যালেক্সিস 'অ্যালেক্স' থেপট। আর তাই পেনাল্টি সেভ করা প্রথম গোলরক্ষক হলেন ফ্রান্সের অ্যালেক্সিস 'অ্যালেক্স' থেপট।

§   পেনাল্টিতে প্রথম গোল করেছেন মেক্সিকোর ম্যানুয়েল রোসাস ১৯ জুলাই ১৯৩০ সালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।.

§  ▶  আত্মঘাতিগোল করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন মেক্সিকোর ম্যানুয়েল রোসাস। তিনি ১৬ জুলাই ১৯৩০ চিলির বিপক্ষে ম্যাচে এই আত্মঘাতি গোলটি করেন।

§  ▶  বিশ্বকাপের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রবার্ট প্যাটেনাউড। তিনি ১৯৩০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ১৭ জুলাই প্যারাগুয়ের বিপক্ষে এই হ্যাট্রিকটি করেন। কিছু রেকর্ডে ভুলভাবে প্রথম খেলোয়াড় প্যাটেনউডের দু'দিন পরে ১৯ জুলাই ১৯৩০-এ মেক্সিকোর বিপক্ষে ৬:৩ ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচে আর্জেন্টিনার গিলারমো স্ট্যাবিলকে প্রথম হ্যাটট্রিক হিসাবে উল্লেখ করে থাকে।

§  ▶  বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে প্রথম বদলি খেলোয়াড় হলেন ফরাসি গোলরক্ষক অ্যালেক্স থেপট, চোটের কারণে তাকে বদলি করানো হয়। ১৯৩০বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মেক্সিকোর একজন খেলোয়াড় এই গোলরক্ষকের চোয়ালে লাথি মারলে তিনি আহত হন। তাঁর বদলে মাঝমাঠের খেলোয়াড় অগাস্টিন চ্যান্ট্রেলকে নামানো হয়। তাই অগাস্টিন চ্যান্ট্রেল হলেন প্রথম বদলি নামা খেলোয়াড়।

   ▶ বিশ্বকাপে ফ্রি কিক থেকে সরাসরি প্রথম গোল করেন আর্জেন্টিনার লুইস মন্টি; তিনি ১৫ জুলাই, ১৯৩০ ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলার ৮১তম মিনিটে গোলটি করেন। মন্টি প্রাচিরের একটি ফাঁককে কাজে লাগিয়ে ছিলেন, যা ফরাসি গোলরক্ষক অ্যালেক্সিস থেপট এর অদেখা ছিল। খেলায় আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে জয়লাভ করে।

১৯৩৪ ইতালি

§   বিশ্বকাপফুটবলেরপ্রথমবাছাইম্যাচটিছিলসুইডেনএবংএস্তোনিয়ারমধ্যে।এটিঅনুষ্ঠিতহয়১৯৩৩সালের১১ইজুন।খেলায় সুইডেন৬-২গোলেরব্যবধানেএস্তোনিয়াকেপরাজিতকরে।

§   বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী প্রথম আফ্রিকার দেশ হচ্ছে মিশর, তারা ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। 

§   বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে পেনাল্টি মিস করা প্রথম খেলোয়াড় ছিলেন ব্রাজিলের ভালদেমার দে ব্রিটো। ১৯৩৪ সালের ২৭মে অনুষ্ঠিত দে ব্রিটোর পেনাল্টি মিস করা ম্যাচে ব্রাজিল স্পেনের কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায়। স্পেনের গোলরক্ষক ছিলেন রিকার্ডো  জামার। এটি ছিল ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে ব্রাজিলের একমাত্র ম্যাচ এবং একমাত্র চূড়ান্ত পর্ব যে বিশ্বকাপে ব্রাজিল কোনও ম্যাচ জিতেনি। পরে ব্রিটো পেলেকে আবিষ্কার ও লালন-পালন করায় তিনি তার খ্যাতি বা অখ্যাতি শুধরাতে পেরেছিলেন।

§   বিশ্বকাপে প্রথম ড্র হওয়া ম্যাচটি ছিল ইতালি এবং স্পেনের মধ্যে, খেলার ফলাফল ছিল ১-১। ম্যাচটি ৩১ মে ১৯৩৪ ইতালির ফ্লোরেন্সে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

§   ▶ অতিরিক্ত সময়ে খেলা হওয়া প্রথম ম্যাচটি ছিল অস্ট্রিয়া বনাম ফ্রান্স এর  মধ্যে, দিনটি ছিল ২৭ মে ১৯৩৪।

§   ▶ অতিরিক্ত সময়ে খেলা হওয়া প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালটি ছিল ইতালি বনাম চেকোস্লোভাকিয়া। খেলাটি হয় ১০ জুন ১৯৩৪।

§  ▶  দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাট্রিক করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন জার্মানির এডমন্ড কোনেন,  জার্মানি বনাম বেলজিয়ামের মধ্যকার খেলায় এই হ্যট্রিকটি হয়েছিল। তিনি গোলগুলি করেন ৬৬তম, ৭০তম এবং ৮৭তম মিনিটে। আর দিনটি ছিল ২৭ মে ১৯৩৪।

§   ▶ আয়োজকদেশেরবাছাইপর্বেখেলাপ্রথমএবংএকমাত্রম্যাচটিহলোইতালি (স্বাগতিক) বনামগ্রীস, ম্যাচটি২৫মার্চ১৯৩৪অনুষ্ঠিতহয়েছিল, আরএতেইতালি৪-০ব্যাবধানেগ্রীসকেপরাজিতকরে।

§   প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে বাছাইপর্বে ৪ গোল করেছিলেন আয়ারল্যান্ডের প্যাডি মুর। বেলজিয়ামের বিপক্ষে ১৯৩৪সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ডাবলিনে অনুষ্ঠিত ৪: ৪ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে তার দলের ৪ টি গোলই তিনি করেছিলেন।

§  ▶ প্রথম এশীয় দেশ হিসাবে বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলে ফিলিস্তিন। ১০ মার্চ ১৯৩৪ সালে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে তারা মিশরের কাছে ৭-১ গোলে হেরে যায়।

 বিশ্বকাপ ফুটবল | যা কিছু প্রথম পর্ব ঃ

১৯৩৮ফ্রান্স

§ ▶   বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা এশিয়ার প্রথম দেশ হলো ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া)। ১৯৩৮ সালে তারা বিশ্বকাপে খেলে।

§   বিশ্বকাপে খেলোয়াড়দের জার্সিতে প্রথম নম্বর ব্যবহৃত হয়েছিল ১৯৩৮ সালের ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে।

   পোল্যান্ডের আর্নেস্ট উইলিমোভস্কি হলেন প্রথম খেলোয়াড় যিনি হ্যাটট্রিক বা তার চেয়ে বেশি গোল করার পরও দল হেরে যায়। অর্থাৎ পরাজিত দলের পক্ষে প্রথম হ্যাট্রিক বা ৪ গোল করা খেলোয়াড় হলেন আর্নেস্ট উইলিমোভস্কি। ব্রাজিলের কাছে তারা ৬-৫ গোলে হেরে যায়, ব্রাজিলের লিওনিডাস হ্যাট্রিক করেন। আর এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৩৮ সালের ৫ জুন।

 

১৯৫৪ সুইজারল্যান্ড

§   বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম খেলোয়াড়ের বদলির ঘটনাটি ঘটে ১১অক্টোবর ১৯৫৩ সালে, জার্মানির হার্স্ট এক্কেলের পরিবর্তে রিচার্ড গোটিনজারকে নামানো হয় সারের বিপক্ষে ম্যাচে।

§   ▶ প্রথম ১৯৫৬ সালের বিশ্বকাপে জার্সি অদলবদলের ঐতিহ্য শুরু হয়।

§   বাছাই পর্বে মুদ্রা নিক্ষেপনের মাধ্যমে বাদ পড়া প্রথম দেশটি ছিল স্পেন। ১৯৫৪ সালের ১৭ মার্র্চ তারিখে অনুষ্ঠিত একটি প্লে-অফ ম্যাচ ২:২ গোলে ড্র হলে খেলাটির ফল নির্ধারণ করা হয় টসের মাধ্যমে। আর তাতে স্পেন তুরস্কের কাছে হেরে যায়।

§   ▶ প্রথমার্ধে হ্যাটট্রিক করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন চেকোস্লোভাকিয়ার এরিখ প্রবস্ট, তিনি অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করেন। এটি দ্রুততম হ্যাটট্রিকও, তিনি খেলার ৪র্থ, ২১তম এবং ২৪ তম মিনিটে গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন।

§   ▶ অতিরিক্ত সময়ে আত্মঘাতি গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন ইংল্যান্ডের জিমি ডিকিসন। বেলজিয়ামের সাথে ইংল্যান্ডের খেলাটি ৪-৪ গোলে ড্র হয়।

১৯৫৮ সুইডেন

§   বিশ্বকাপে প্রথম গোলবিহীন ম্যাচটি ছিল ব্রাজিল বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যে, আর খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৮ সালের ১১ জুন সুইডেনের স্টকহোমে।

§  ▶  বিশ্বকাপের কোন খেলা প্রথম সরাসরি বিশ্বব্যাপী টিভিতে সম্প্রচার করা হয়  ১৯৫৮ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে।

     বিশ্বকাপ ফুটবলে যা কিছু প্রথম, পর্ব-২


১৯৬২  চিলি

§   ▶ ১৯৬২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে কলম্বিয়ার মার্কোস কল বিশ্বকাপে প্রথম "অলিম্পিক গোল" করেন। তিনি গোলরক্ষক লেভ ইয়াশিনকে বোকা বানিয়ে কর্ণার কিক থেকে সরাসরি গোল করেন। খেলাটি ৪-৪ গোলে হয়।

"অলিম্পিক গোল”: একটি 'অলিম্পিকো' গোল বা অলিম্পিক গোল হল এমন একটি গোল যা সরাসরি কর্নার কিক থেকে করা হয়। ১৯২৪ সালে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় সিজারিও ওনজারি কর্নার কিক থেকে সেসময়ের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। এরপর গোলটিকে স্প্যানিশ ভাষায় 'গোল অলিম্পিকো' বা 'অলিম্পিক গোল' নামে পরিচিতি পায়।

১৯৬৬ ইংল্যান্ড

§   ▶ ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথমবারের মতো ড্রাগ টেস্টি চালু করা হয়। ড্রাগ টেস্টে ব্যর্থ হওয়ার পর নিষিদ্ধ হওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে হাইতির আর্নেস্ট জিন-জোসেফ (১৯৭৪), স্কটল্যান্ডের উইলি জনস্টন (১৯৭৮) এবং আর্জেন্টিনার দিয়েগো ম্যারাডোনা (১৯৯৪) আছেন।

§  ▶  বিশ্বকাপের প্রথম মাসকটটি ছিল সিংহের মতো একজন বালক যার নাম ছিল উইলি । ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এটি প্রথম ব্যবহৃত হয়।

§  ▶  বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্ট, ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে তিনি প্রথমার্ধ, দ্বিতীয়ার্ধ এবং অতিরিক্ত সময়ে গোল তিনটি করেন।

§   ▶ এক বিশ্বকাপে দুটি আত্মঘাতি গোল করা প্রথম দল হলো বুলগেরিয়া। তারা পর্তুগাল ও হাঙ্গেরির বিপক্ষে এই ঘটনা ঘটায় এবং দুটি ম্যাচেই হেরে যায়।

§  ▶  বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথম রাউন্ড পেরোনো প্রথম এশিয়ান দল হলো ১৯৬৬ সালে উত্তর কোরিয়া।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.